মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন, বধ্যভূমি ও গণকবর - Monuments

তিন দিকে সীমান্ত পরিবেষ্টিত ও ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড় অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়ে ব্যাপক গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টরের অধীনে ৬-এ সাব-সেক্টর হিসেবে এই অঞ্চলের মুক্তাঞ্চলের পরিধি ও বিস্তৃতি ছিল বাংলাদেশের অন্যান্য মুক্তাঞ্চলের চেয়ে বেশি। বর্বর নরপিশাচ পাক-বাহিনীর কাছ থেকে ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্বরূপ আছে গণকবর, বধ্যভূমি, স্মৃতিসৌধ, মুক্তাঞ্চল, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি, স্মৃতি বিজড়িত মুক্তিযোদ্ধাদের নিদর্শন। বেঁচে আছেন জাতির সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনারা, মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও সহযোগিতাকারী সাহসীরা বাঙালি আর মুক্তিযুদ্ধের হাজারো প্রত্যক্ষদর্শী।

পঞ্চগড়ের লেখক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক মো. নুরুল হুদা পঞ্চগড়ে ১৭-১৮ টি বধ্যভূমি ও গণকবর চিহ্নিত করেন। পঞ্চগড় জেলা ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতি গ্রন্থে ড. নাজমুল হক ১০টি গণহত্যা, ৭ টি গণকবরের এবং মুক্তিযুদ্ধের কিশোর ইতিহাস: পঞ্চগড় জেলা গ্রন্থে শফিকুল ইসলাম ১৯টি বধ্যভূমি ও গণকবরের বর্ণনা দিয়েছেন। সম্প্রতি গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ গ্রন্থের লেখক আলী ছায়েদ– এর উদ্যোগে গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপে পঞ্চগড় জেলায় ৪ টি বধ্যভূমি, ১৭ টি গণকবর, ৬৪৯ টি গণহত্যা, ২৩ টি নির্যাতন কেন্দ্র রয়েছে বলে জানা গেছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে ও মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে কিছু নির্দশন নতুন করে নির্মাণ অথবা পুনর্নিমাণ করা হয়েছে। অধিকাংশ স্মৃতিস্তম্ভ, বধ্যভূমি ও গণকবর রক্ষনাবেক্ষন অতীব জরুরি। অযত্ন ও অবহেলায় পরে থাকা  মুক্তিযোদ্ধাদের কিছু সংখ্যক কবর হয়ে যাচ্ছে নিশ্চিহ্ন। 

স্বাধীনতার তীর্থভূমি, তেঁতুলিয়াআরো পড়ুন
স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তাঞ্চল তেঁতুলিয়া ও তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোর অবদানের কথা চিরস্মরণীয় করে রাখতে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো ভবনের পাশে চারকোনা বেদির উপরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। ঐতিহাসিক এই স্মৃতিস্তম্ভটির নামকরণ করা হয়েছে স্বাধীনতার তীর্থভূমি তেঁতুলিয়া। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা ছিল মুক্তাঞ্চল। আরো পড়ুন

দেবনগর স্মৃতিসৌধ, তেঁতুলিয়া
তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর বাজারের পূর্ব পাশে কেন্দ্রীয় গোরস্থানের উত্তরে নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন দেবনগর স্মৃতিসৌধ। পুরো মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ভজনপুর দেবনগর ফ্রন্টে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা অসম সাহসিকতার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তাঁদের গৌরবময় অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখতে দেবনগর স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধের পাশে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে।

একাত্তর মুক্তাঞ্চল ফলক, তেঁতুলিয়াআরো পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই মুক্ত ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। মুক্তাঞ্চল হিসেবে এই ৭৪ বর্গমাইলের মানুষের জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মুক্ত ছিল পঞ্চগড় জেলা। ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা পঞ্চগড় দখলে নেয়। এ দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে না পেরে উত্তরের দিকে পেছাতে থাকেন। পাকিস্তানি সেনারা যাতে তেঁতুলিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মুক্তিযোদ্ধারা পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের অমরখানা এলাকার চাওয়াই নদীর অমরখানা ব্রিজ ডিনামাইট দিয়ে গুঁড়িয়ে দেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় তেঁতুলিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আগ্রাসনমুক্ত থাকে। অমরখানার চাওয়াই নদীর অমরখানা ব্রিজের পাশে ১৯৭১ মুক্তাঞ্চল ফলক নামে স্বাধীনতার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।আরো পড়ুন

ডাঙ্গিরহাট বধ্যভূমি, আটোয়ারী আরো পড়ুন
১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনীর দোসরেরা আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়ন থেকে ২০-২৫ জন মানুষকে ধরে নিয়ে ডাঙ্গিরহাট পাকিস্তানি ক্যাম্পে বন্দি করে। মির্জাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ তছলিমুদ্দিন ছিলেন ঐ দলে। দুই দিন যাবৎ অমানবিক নির্যাতন শেষে ৬ আগস্ট হানাদার পাকিস্তানি সেনারা মোঃ তছলিমউদ্দিন সহ ১৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে তাঁদের লাশ ডাঙ্গিরহাট বধ্যভূমিতে পুঁতে রাখে। আরো পড়ুন

প্রথম পতাকা উত্তোলন স্মৃতিস্তম্ভ, দেবীগঞ্জ
১৯৭১ সালের ১০ মার্চ দেবীগঞ্জ বাজার এবং ভূমি অফিসের সামনে দেবীগঞ্জে প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রথম পতাকার স্কেচ করে দেন আব্দুল লতিফ মাস্টার। পতাকা উত্তোলন করেন আব্দুল লতিফ, আ. কা. ম. মনিরুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক বাবুল, বাবু স্বদেশ চন্দ্র রায়, রহিমুল ইসলাম, রবিউল আলম, মনজুরুল হক রেজু, মোহাম্মদ হুসেন (বাবুয়া) ও প্রমুখ। উল্লেখিত ১০ মার্চ, সকাল ১০/১১ টার দিকে তাঁরা দেবীগঞ্জ ভূমি অফিসের সামনের পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে তা পুড়িয়ে দেন এবং বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলনের সেই গৌরবময় মুহূর্তে বাজার এলাকায় চলাচলকারী সকল বাঙালিরা পতাকার সম্মানের দাঁড়িয়ে যান।

পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে মুক্তিযোদ্ধারা দেবীগঞ্জ সদরের ৩ দিক থেকে করতোয়া নদীর পশ্চিম পাড়, ভাজনী ও গোপাল বৈরাগী ঘাট এলাকায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে ঘেরাও করে রাখেন। ৯ ডিসেম্বর ৬ নং সেক্টর কমান্ডার এ. কে. ভুঁইয়ার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা তুমুল লড়াই করে দেবীগঞ্জকে স্বাধীন করেন। পাকহানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজয় বরণ করে ভোর ৬ টায় দেবীগঞ্জ থেকে ডোমার হয়ে সৈয়দপুরের দিকে পালিয়ে যায়। সেদিন বিকাল ৪টায় দেবীগঞ্জ আনসার ভিডিপি অফিসের সামনে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দেবীগঞ্জ হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন দেবীগঞ্জ উপজেলার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল আলম প্রধান

ধাপঢুপ বধ্যভূমি, বোদা আরো পড়ুন
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পঞ্চগড় জেলার সবচেয়ে বড় গণহত্যা ঘটেছিল বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার ধাপঢুপ বিলের পাড়ে। ধাপঢুপ গণহত্যা পঞ্চগড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দালালদের নির্মমতার এক বড় সাক্ষী। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ১৯৭১-এর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি কোনো এক শুক্রবার পৈশাচিক পাকিস্তানি বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় ঢাপঢুপ বিলের পাড়ে প্রায় ৩৫০০ মানুষকে গুলি করে ও কোদাল দিয়ে কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে। স্বাধীনতার ইতিহাসের নির্মম সেই ক্ষনে অগুনতি মানুষের রক্তে ভরে উঠেছিল ঢাপঢুপ বিল। আরো পড়ুন

ময়দানদিঘী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলক, বোদা
ময়দানদিঘী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ প্রবেশ পথের বাম পাশের দেয়ালে রয়েছে ময়দানদিঘী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলক। এই স্মৃতিফলকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদগণ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের নামের তালিকা লিখা রয়েছে। ময়দানদিঘী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিফলক উৎসর্গ করা হয়েছে আরো নাম না জানা শত শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাগণকে।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়ক, আটোয়ারী আরো পড়ুন
আটোয়ারীর কেন্দ্রস্থল ফকিরগঞ্জ বাজার সংযুক্তকারী ৬ টি সড়ক মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন উৎসর্গকারী ৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে তাঁদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সন্মান জানিয়ে তাঁদের নামে অত্র এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৫ সালে আটোয়ারী উপজেলার ফকিরগঞ্জ বাজারে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে একটি মুক্তাঙ্গন নির্মাণ করা হয়। আরো পড়ুন

ডাকবাংলো নির্যাতন কেন্দ্র ও বধ্যভূমি, পঞ্চগড় সদর আরো পড়ুন
পঞ্চগড়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের মূল স্থানটি ছিল পঞ্চগড় জেলা পরিষদে অবস্থিত ডাকবাংলো এলাকায়। ১৯ এপ্রিল থেকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই এখানে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিল। পাকিস্তানি বাহিনী পঞ্চগড় জেলায় ডাকবাংলো ও সুগার মিল মাঠেই তাদের বড় ঘাঁটি স্থাপন করে এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে। বড় ঘাঁটি দুটি পরবর্তীতে গণহত্যা ও নির্যাতনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই অধিকাংশ গণহত্যা এই ডাকবাংলো ক্যাম্প ও নির্যাতন কেন্দ্র সংগঠিত হয়েছিল। আরো পড়ুন

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক, পঞ্চগড় সদর আরো পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার অফিসের সামনে নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক। পঞ্চগড় জেলার ৫৪ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নাম-পরিচয় এই ফলকে খোদাই করে লেখা রয়েছে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে মহান স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসে তোপধ্বনি দেওয়া হয়, শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় জাতির বীর সন্তানদের। আরো পড়ুন

অপ্রতিরোধ্য বাংলা জাদুঘর, তেঁতুলিয়া আরো পড়ুন
মুক্তিযুদ্ধকালীন দুর্লভ ছবি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ভরপুর এক সংগ্রহশালা অপ্রতিরোধ্য বাংলা জাদুঘর। তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোর একটি পরিত্যক্ত ঘরকে স্থানীয় কাঞ্চন বাঁশ দিয়ে অলংকৃত করে তৈরি করা হয়েছে জাদুঘর। তেঁতুলিয়ার মহানন্দার পাড় থেকে অপরূপ কাঞ্চনজঙ্ঘা, সমতলে চা-বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টরওশনপুরের আনন্দধারা‘র পর্যটকগণ ইতিহাসের শিক্ষালয় অপ্রতিরোধ্য বাংলা জাদুঘর দেখেও মুগ্ধ হন। আরো পড়ুন

রাধানগর গণকবর, আটোয়ারী
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

দাঁড়িয়ার দীঘি গণকবর, মির্জাপুর, আটোয়ারী
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

পারঘাট বধ্যভূমি, দেবীগঞ্জ
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

লইপাড়া গণকবর, সাতমেরা, পঞ্চগড় সদর
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো আরো পড়ুন
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের নীরব সাক্ষী তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা ছিল মুক্তাঞ্চল। এই মুক্তাঞ্চলের কেন্দ্র তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোয় বসেই ৬ নম্বর সেক্টরের যাবতীয় পরিকল্পনা করতেন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানীসহ প্রবাসী সরকারের মন্ত্রী-কর্মকর্তারা ও মুক্তিযোদ্ধারা। তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোতে মুক্তিযুদ্ধের ৬ নম্বর সেক্টর কমান্ডার এম কে বাশার বসবাস করতেন। আরো পড়ুন

তর্জনী স্তম্ভ, তেঁতুলিয়া
ঐতিহাসিক সাত মার্চের ভাষণের ৫০ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে তেঁতুলিয়া মুক্তাঙ্গনে স্থাপিত হয়েছে তর্জনী স্থম্ভ। তেঁতুলিয়া উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে মোজাইক করা বেদীতে বর্গাকৃতির টাইলসকৃত আসনের উপর এই তর্জনীয় স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে। শুভ্র সাদা রংয়ের তর্জনীটির উচ্চতা ৬ ফুট। তর্জনী ফলকে লেখা রয়েছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এবং নিচের অংশে চিত্রিত রয়েছে ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা অস্ত্র হাতে খানসেনাদের জিপ গাড়ি উড়িয়ে দেয়ার চিত্র। এই ৩ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ১ জন নারী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। স্তম্ভটি নিরপেক্ষতা, গণ মানুষের অধিকার, অপ্রতিরোধ্য, হুশিয়ার ও সাহসিকতার প্রতীক। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির উদ্দেশ্যে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক এই ভাষণ প্রদানের কালে বেশিরভাগ সময়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর তর্জনী উঁচু করে ধরে রাখেন। জাতির জনকের এই তর্জনী বাঙালির মুক্তি-স্বাধীনতার প্রতীক। তর্জনী স্তম্ভটি ২০২১ সালের ৭ মার্চ (১৪২৭ সালের  ২২ ফাল্গুন) তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা উদ্বোধন করেন।

৭ মার্চ চত্বর, তেঁতুলিয়া
তেঁতুলিয়া উপজেলার ডাকবাংলো ভবনের পাশে পিকনিক কর্নারের অভ্যন্তরে শেষ প্রান্তে স্থাপিত হয়েছে ৭ই মার্চ চত্বর। এই চত্বরে পিকনিক কর্নারের দেয়ালের উপরে দুটি ম্যুরাল চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একটি ম্যুরাল রেসকোর্স ময়দানে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান ডান হাতের তর্জনী উঁচিয়ে ভাষণরত এবং সামনে নিমগ্ন বাঙালি জনগোষ্ঠী, অপরটিতে রয়েছেন একক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। ঐতিহাসিক এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।‘ ১৯১৮ সালের ২০ অক্টোবর (১৪২৫ সালের ৫ কার্তিক) পঞ্চগড়-১ সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হক প্রধান ৭ মার্চ চত্বর উদ্বোধন করেন।

বীরশ্রেষ্ঠ ম্যুরাল, তেঁতুলিয়া
ঐতিহাসিক তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো চত্বরের অভ্যন্তরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ এর স্মরণে বীরশ্রেষ্ঠ ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। লাল-সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠ-এর ম্যুরাল চিত্রিত করেছেন শিল্পী রামকৃষ্ণ মন্ডল। ২০১৯ সালের ২ আগস্ট তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাব্লিউ বীরশ্রেষ্ঠ ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। বীরশ্রেষ্ঠ মুরারের ডান পাশে রয়েছে দুই হাতে মজবুত করে ধরে রাখা একটি রাইফেল, রাইফেলের অগ্রভাগে উড়ন্ত স্বাধীন দেশের পতাকা। বাম পাশে কালো পাথরের উপর খোদাই করে লেখা রয়েছে ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠের নাম, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ। নিচের অংশে লেখা রয়েছে গীতিকার কাজী নজরুল ইসলাম বাবুর বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গানের কিছু অংশ ‘…সব কটা জানালা খুলে দাও না, আমি গাইবো গাইবো, বিজয়েরই গান, ওরা আসবে চুপি চুপি।

বীর বিক্রম শহীদ সকিম উদ্দিন সমাধি, তেঁতুলিয়া আরো পড়ুন
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সকিম উদ্দিন পঞ্চগড়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে ৬ নম্বর সেক্টরের ভজনপুর সাব-সেক্টরের সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন। শহীদ সকিম উদ্দিনের মরদেহ তেঁতুলিয়ার নিকটবর্তী জগদল হাটে সমাহিত করা হয়। পঞ্চগড়ের জগদল হাটের বায়তুল আমান মসজিদের সামনে বীর বিক্রম শহীদ সকিম উদ্দিনের সমাধি সংরক্ষিত রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। আরো পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম, পঞ্চগড় সদরআরো পড়ুন
২০০৯ সালের ২৮ জুন পঞ্চগড়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান উত্তরবঙ্গের বাঘ নামে পরিচিত এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে সম্মান জানিয়ে পঞ্চগড় জেলা স্টেডিয়াম-এর নামকরণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম। পঞ্চগড়ের বর্ষীয়ান এই নেতা ছিলেন পঞ্চগড়ের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রাণপুরুষ, মহান মুক্তিযুদ্ধের দক্ষ সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের ৬/ক সাব সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, পঞ্চগড়ের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি।আরো পড়ুন

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন, পঞ্চগড় সদর আরো পড়ুন
পঞ্চগড়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান উত্তরবঙ্গের বাঘ নামে পরিচিত এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামকে সম্মান জানিয়ে পঞ্চগড় রেলস্টেশন-এর নামকরণ করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন। পঞ্চগড়ের বর্ষীয়ান এই নেতা ছিলেন পঞ্চগড়ের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রাণপুরুষ, মহান মুক্তিযুদ্ধের দক্ষ সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের ৬/ক সাব সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, পঞ্চগড়ের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি। আরো পড়ুন

এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম স্মরণে পঞ্চগড়ের সাবেক পুঠিমারী ছিটমহলের নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম নগর ও নবাবগঞ্জ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে।

শহীদ আব্দুল কাদের মিয়া এম. আই. সেন্টার, পঞ্চগড় সদর
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

শহীদ প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ স্মৃতি মিনার, পঞ্চগড় সদর
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

শহীদ হারুন অর রশিদ সড়ক, পঞ্চগড় সদর আরো পড়ুন
১৯৭১ এর ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় মুক্ত হওয়ার দিনে পঞ্চগড় চিনিকল এলাকায় উড়তে থাকা পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা ওড়াতে গিয়ে শহীদ হন সাহসী যোদ্ধা হারুন আর রশিদ রবি। পঞ্চগড় মুক্ত হওয়ার আনন্দ সেদিন বিষাদে পরিণত হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রবির রক্তে। হারুন আর রশিদ রবি’র নামে পঞ্চগড় সুগার মিল সড়ক ও হাড়িভাসার ঢাঙ্গীপুকুর-বাঙ্গালপাড়া সড়কের নামকরণ হয়েছে। আরো পড়ুন

শহীদ আইয়ুব সড়ক, তেঁতুলিয়া
[শীঘ্রই তথ্য সংযুক্ত করা হবে]

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ, দেবীগঞ্জ
মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ বিসর্জন দেওয়া শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে ২০১৯ সালে সারা দেশের ন্যায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ পৌরসভার বাবুপাড়া সংলগ্ন সরকারি খাস জমিতে প্রায় ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় দেবীগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ।

পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল পার্ক আরো পড়ুন
পঞ্চগড় সদর উপজেলাধীন অমরখানা ইউনিয়নের দশমাইল বাজারের পুর্বে চাওয়াই নদীর তীরে চাওয়াই ব্রিজ সংলগ্ন মুক্তাঞ্চল এলাকার সূচনাবিন্দুতে, তেঁতুলিয়া মুক্তাঞ্চলকে মুখ্য করে, পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে পঞ্চগড়ের ৫টি গড়ের ইতিহাসকে ধারণ করে ৫টি আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন গোলঘড় নির্মাণ করে প্রতিটি গোলঘড়কে গড়সমুহের নামাংকিত করা হয়েছে। পার্কে একটি মানচিত্রে মুক্তাঞ্চল ও গড়সমূহের অবস্থান চিত্রায়িত করা আছে। পঞ্চগড় মুক্তাঞ্চল পার্কের মূল আকর্ষণ I ♥️ PANCHAGARH স্থাপনাটি দেখে সারাদেশ থেকে আগত পর্যটকগণ পঞ্চগড়ের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের পাশাপাশি স্মৃতি ধারণ এবং মুক্তাঞ্চল-এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারেন। চাওয়াই নদীর কোল ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত বাধ মুক্তাঞ্চল পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। মুক্তাঞ্চল পার্কের সন্নিকটে চাওয়াই ব্রিজের অপরপাশে রয়েছে ঐতিহাসি ১৯৭১ মুক্তাঞ্চল ফলকআরো পড়ুন


তথ্যসূত্রঃ ড. নাজমুল হকআলী ছায়েদআল ফরিদ | মো. ফরহাদ আলী শুভ
Last updated: [update in progress]

Today's Weather

Recent News

Facebook Page