এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম – Advocate Sirajul Islam

উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান নেতা উত্তর বঙ্গের বাঘ বলে কথিত মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬/ক সাব সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, পঞ্চগড়ের ৪ বারের নির্বাচিত এমপি, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের আমৃত্যু সভাপতি, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি ছিলেন আজীবন বিদ্রোহী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সদা জাগ্রত সৈনিক এবং বঙ্গবন্ধুর একান্ত স্নেহভাজন ব্যক্তিত্ব।

এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ৯ জানুয়ারি ১৯৪৪ সালের বর্তমান পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের মহাজন পাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ইমাজ উদ্দীন আহম্মেদ এবং মাতার নাম কবিজান নেছা।

এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সময়ে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে পালন করেন অগ্রণী ভূমিকা। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন ৬৬ ছয় দফা এবং সর্বোপরি ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে তেঁতুলিয়া মুক্তাঞ্চলের তীর্থভূমি হিসেবে সারাবিশ্বের পরিচিতি লাভ করে। এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ছিলেন মর্যাদাপূর্ণ রাজনৈতিক জীবনের অধিকারীঃ

  • উত্তর বঙ্গের মাটি ও মানুষের নেতা।
  • জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর।
  • বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি।
  • রাজশাহী বিভাগীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
  • কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।
  • ডাকসুর সহ-সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
  • মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ৬/ক সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা।
  • ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের কনিষ্ঠতম সদস্য হিসেবে পঞ্চগড় থেকে নির্বাচিত।
  • মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
  • কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ১ম আর্ন্তজাতিক সম্পাদক।
  • ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত।
  • পঞ্চগড় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি।
  • বঙ্গবন্ধুর ২য় বিপ্লব কর্মসূচীর/বাকশালের ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক।
  • ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত।
  • ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত।
  • জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন সহকর্মী।

 

এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পারিবারিক জীবনে চার সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর মরহুমা সুরাইয়া ইসলাম মঞ্জু। তিন মেয়ে ইমতিয়াজ শারমিন বিন্টিশিয়া, সানজিদা মুস্তাকিম বিন্টিশিয়া, সাজিয়া আফরোজ বিন্টিশিয়া এবং এক ছেলে (মৃত) আবু নূর মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম বিন্টিশিয়া (সুবর্ণ)। সিরাজুল ইসলামের একমাত্র সহোদর নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় ২ আসনের সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’এর বর্তমান (২০২৩) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।

উত্তর বঙ্গের জননেতা এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ২ জুন ১৯৯৭ সালে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫৩ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন। তিনি মৃত্যুকালীন পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার কর্মসূচী বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিলেন। পঞ্চগড়ের ইতিহাসে এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম’এর স্মৃতি হৃদয়পটে চির অমলীন, চির সমুজ্জ্বল।

সম্মাননাঃ জাতির তথা উত্তরবঙ্গের এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে সম্মান জানিয়ে তাঁর নামে পঞ্চগড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলস্টেশন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়াম, সাবেক পুঠিমারী ছিটমহলের নাম পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম নগর ও নবাবগঞ্জ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে।

 


Last updated: 9 November 2023

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Photo

এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম
(১৯৪৪-১৯৯৭)

  • সংসদ সদস্য
  • কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ১ম আর্ন্তজাতিক সম্পাদক
  • মুক্তিযুদ্ধ ৬/ক সেক্টরের বেসামরিক উপদেষ্টা
  • মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক
  • ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের কনিষ্ঠতম নির্বাচিত সদস্য
  • সহ-সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ
  • সহ-সম্পাদক, ডাকসু
  • সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিভাগীয় ছাত্রলীগ
  • বৃহত্তর দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি