বাংলাদেশ রেলওয়ে অভূতপূর্ব উন্নয়ন, রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার রূপকার সাবেক রেলমন্ত্রী মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী, পঞ্চগড় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী পক্ষের অন্যতম আইনজীবী এবং পঞ্চগড় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি।
এ্যাডভোকেট মোঃ নূরুল ইসলাম সুজন, ৫ জানুয়ারী ১৯৫৬ সালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘির মহাজনপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জনাব ইমাজউদ্দিন আহমেদ এবং মাতা কবিজান নেছা। বর্ষীয়ান নেতা বড় ভাই এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম এবং পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি সর্ব কণিষ্ঠ।
নূরুল ইসলাম সুজন তিন সন্তানের জনক, প্রথম সন্তান পুত্র মোঃ কৌশিক নাহিয়ান নাবিদ এবং দুই কন্যা যথাক্রমে নিমিলীতা ইসলাম আনিকা ও অনামিকা ইসলাম প্রিয়ম। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম সুজনের নিলুফার জাহান অসুস্থতার কারণে ৫৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। নূরুল ইসলাম সুজন পরবর্তীতে ৫ জুন ২০২১ সালে দিনাজপুরের বিরামপুরের শাম্মী আকতার মনিকে বিয়ে করেন।
এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে বিএসসি অনার্স এবং ১৯৭৯ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে এল.এল.বি. ডিগ্রী এবং ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হবার পর সুনামের সহিত দীর্ঘ ৩৩ (তেত্রিশ) বছর আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
ছাত্রজীবনে জনাব নূরুল ইসলাম সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এর ১৯৮০-৮১ সালের সংসদের বিজ্ঞান মিলনায়তন সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। জনাব সুজন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জনাব নূরুল ইসলাম সুজন পেশা জীবনে আইনজীবী হিসেবে ১৯৯০-৯১ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহ-সম্পাদক এবং ২০০৮-২০০৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। নূরুল ইসলাম সুজন ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বাদী পক্ষের অন্যতম আইনজীবী ছিলেন এবং ঐতিহাসিক জেল হত্যা মামলারও বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন।
বড় ভাই মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ১৯৯৭ সালের ২রা জুন ইন্তেকাল করার পর নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চলে আসেন। সুজন ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড় ২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম অংশগ্রহণ করে পরাজিত হন। কিন্তু পরবর্তীতে নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড় ২ আসন থেকে নবম (২০০৮), দশম (২০১৪), একাদশ (২০১৮) এবং দ্বাদশ (২০২৪) জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
নূরুল ইসলাম সুজন নবম জাতীয় সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর এর রিজেন্ড বোর্ডের সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা-এর সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নূরুল ইসলাম সুজন দশম জাতীয় সংসদের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও বে-সরকারী সিদ্ধান্ত প্রস্তাব বিল এবং সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নূরুল ইসলাম সুজন পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সুপ্রীম কোর্ট শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এর যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ছিলেন। তিনি যুব সংগঠন কেন্দ্রীয় যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। জনাব সুজন ২০০৪ এবং ২০২২ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন।
গত ৩০শে ডিসেম্বর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনাব নূরুল ইসলাম সুজন তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রীসভায় নিযুক্ত করেন এবং তিনি ৭ জানুয়ারী ২০১৯ সালে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
তথ্যসূত্রঃ রেলপথ মন্ত্রণালয়
Last updated: 11 January 2024