আনন্দধারা রিসোর্ট – Anandadhara Resort

আনন্দধারা রিসোর্ট - Anandadhara Resort

রওশনপুর গ্রাম, তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

ম্যাপঃ Google Map
ফোন/মোবাইলঃ N/A
ফেসবুকঃ N/A
ওয়েবসাইটঃ https://kazitea.com/

প্রাচুর্য, সৌখিনতা ও প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সমন্বয়ের নিদর্শন কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের আনন্দধারা রিসোর্ট। তেঁতুলিয়া উপজেলার রওশনপুর গ্রামে অবস্থিত কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট কর্তৃক নির্মিত আন্তর্জাতিক মানের এই প্রাইভেট রিসোর্টটি পঞ্চগড়ের পর্যটন শিল্পের এক অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। আনন্দধারা রিসোর্ট মূলত কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের মালিক পক্ষের পরিবার, বন্ধুবান্ধব, টি এস্টেটের আন্তর্জাতিক বায়ার এবং অতিথিগণ ব্যবহার করে থাকেন। আনন্দধারা রিসোর্টে সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। পূর্বানুমতি না থাকলে আনন্দধারা রিসোর্টের ভিতরে প্রবেশ করা যায়না।

২০০০ সালে কাজী শাহেদ আহমেদ এর মালিকানাধীন জেমকন গ্রুপ পঞ্চগড়ে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তেঁতুলিয়া এলাকায় ব্যাপকভাবে জমি অধিগ্রহণ, চা বাগান তৈরী ও চা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়। সুবিশাল টি এস্টেট প্রতিষ্ঠার অংশ হিসাবে ২০০১ সালে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট তৈরী করে আনন্দধারা রিসোর্ট। পঞ্চগড়ের চা শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রারম্ভিক কাল থেকেই কাজী এন্ড কাজী বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু করে। সমগ্র পঞ্চগড় জেলা জুড়ে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের প্রায় ৪,১৫০ একর পরিমান জমিতে একাধিক প্রজেক্ট ও চা বাগান রয়েছে। রওশনপুর গ্রামের প্রায় ৪০০ একর জমির উপরে অর্গানিক চা বাগান, চা কারখানা, ডেইরি ফার্ম, মীনা বাজার, ওয়ার্কশপ এবং আনন্দধারা রিসোর্ট নিয়ে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের আঞ্চলিক কার্যালয় এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। আনন্দধারা রিসোর্ট তৈরী করা হয়েছে ৩.৫ একর এলাকা নিয়ে। তেঁতুলিয়ার রওশনপুরে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের চা বাগানটি বাংলাদেশের একমাত্র অর্গানিক চা বাগান।

আনন্দধারা রিসোর্টে কাজী অ্যান্ড কাজী চা বাগানে স্ত্রী আমিনা আহমেদের সঙ্গে কাজী শাহেদ আহমেদ।

শৈল্পিক মানসিকতায় গড়া অত্যাধুনিক কাঠের কটেজ, ব্রিজ, লেক, ডাহুক নদী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, সমতল ভূমির চা বাগান, সবুজ মাঠ, ঘোড়া, শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশ আর অদূরে কাঞ্চনজঙ্ঘা- সবকিছু নিয়ে প্রকৃতি ও আধুনিকতা মিলে এক আদি আর অকুত্রিম নৈসগিক সৌন্দর্যের পরিবেশনা সমগ্র আনন্দধারা রিসোর্ট এলাকা জুড়ে। সবুজের সমারোহে আচ্ছাদিত আনন্দধারা রিসোর্টের মেইন গেট দিয়ে প্রবেশের পর রয়েছে গাছের ছাউনি দিয়ে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে, লতাপাতার ছায়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন ও রোমাঞ্চকর ওয়াকওয়ে পার হলেই দেখা মিলবে উৎকৃষ্ট আর্কিটেকচার ডিজাইনিং-এ তৈরী করা আনন্দধারা রিসোর্টের একাধিক কটেজ। আনন্দধারা রিসোর্টের বাড়তি আকর্ষণ রিসোর্টের ঠিক মাঝখান দিয়ে বহমান ডাহুক নদী। নদীর তীর ঘেঁষে রয়েছে কংক্রিটের সেতু বা ট্রেইলার, যা আনন্দধারা রিসোর্টের সকল অবকাঠামোগুলোকে সংযুক্ত করেছে।

রিসোর্টের ভেতরে মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে হার্ট (heart) আকৃতির একটি লেক, এই লেকের পাশেই আভিজাত্য ও আধুনিক ধাঁচে গড়া একাধিক দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর কটেজ ৷ কটেজগুলি শৈল্পিক ডিজাইন ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সজ্জিত। লেকের ঠিক পাশেই ব্রিজ পেরিয়ে রয়েছে পরিস্কার ও পরিপাটি করে সাজানো রিসোর্টের প্রধান বিশ্রামাগার। বিশ্রামাগারের পাশের আকর্ষণীয় এক্সেকিউটিভ কটেজটির দেয়াল সম্পূর্তভাবে নিম গাছের ডাল দিয়ে তৈরি

রওশনপুর গ্রামে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটে আনন্দধারা রিসোর্ট ছাড়াও সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে একটি মিনি মীনা বাজার। কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের তৈরী চা, বিভিন্ন অর্গানিক খাবার, চা গাছ ইত্যাদি এখানে বিক্রি করা হয়। আরো রয়েছে প্রায় ১৫ একর জমির উপরে তৈরী ডেইরি ফার্ম। ডেইরি ফার্মে রয়েছে ৪০০-এর অধিক গরু। কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের কর্মচারীদের ব্যবহারের জন্য রয়েছে BOQ গেস্ট হাউস। আরো রয়েছে বিনোদর পার্ক এবং শিশুদের জন্য খেলাধুলার জায়গা।

২০২৩ সালে নদী ভাঙ্গনের কারণে আনন্দধারা রিসোর্টের অভ্যন্তরের ডাহুক নদী পারাপারের সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অবস্থানঃ পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার রওশনপুর গ্রামে আনন্দধারা রিসোর্ট-এর অবস্থান। তেঁতুলিয়া উপজেলা শহর থেকে আনন্দধারা রিসোর্ট এর দূরত্ব ১৭ কিমি।

কখন যাবেনঃ আনন্দধারা রিসোর্ট সারা বছরজুড়ে খোলা থাকে। পূর্বানুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করার নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত

কিভাবে যাবেনঃ আনন্দধারা রিসোর্ট একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন রিসোর্ট (Private Resort)। রিসোর্টে সর্বসাধারণের থাকার কোনো সুযোগ নেই এবং আনন্দধারা রিসোর্টে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকার কারণে পর্যটক ও সাধারণ দর্শনার্থীরা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় পূর্বানুমতির জোগাড় করে রিসোর্টটি দেখতে আসেন। সীমিত সময়ের জন্য রিসোর্টের ভেতরে প্রবেশ করার এটিই একমাত্র অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থা

তেঁতুলিয়া উপজিলা শহর থেকে সড়কপথে ১৭ কিমি দূরত্বে আনন্দধারা রিসোর্ট পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় যানবাহন (রিক্সা/অটোভ্যান) রয়েছে। তবে পঞ্চগড় সদর থেকে গাড়ী, মোটরসাইকেল বা রেন্ট এ কার ব্যবহার করা সুবিধাজনক। উপজেলা শহর থেকে শালবাহান বাজার পার হয়ে কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেটের মাঝে আনন্দধারা রিসোর্টে প্রবেশের প্রধান ফটক। Travel Tips | Accommodation | Tourist Spots

 


ছবিঃ এস এ সেলিম
Last updated: 2 February  2024

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn