বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট – Banglabandha Zero Point

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট - Banglabandha Zero Point

তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়।

বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে অবস্থিত বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের সীমান্তবর্তী সুপরিচিত একটি ল্যান্ডমার্ক। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের প্রান্ত শনাক্তকারী একটি স্তম্ভ এবং সেখান থেকেই বাংলাদেশের শুরু। তেঁতুলিয়া উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশ মানচিত্রের সর্ব-উত্তরের স্থান বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর

জিরো পয়েন্ট মূলত কংক্রিক-পাথর দ্বারা নির্মিত বিশাল আকারের একটি জিরো। সীমান্তের ২০০ গজ অভ্যন্তরে নিৰ্মান্ত হলেও সকল দর্শনার্থীগণ জিরো পয়েন্ট’কে ভারতের সীমান্তের শেষ এবং বাংলাদেশের সীমান্তের শুরুর পয়েন্ট হিসেবেই বিবেচনা করেন। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পঞ্চগড় জেলার পর্যটন শিল্পের আইকন হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহের প্রথমেই সামনে আসে হিমালয়ের পাদদেশে তেঁতুলিয়া অবস্থিত বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট।

সেলফি প্রেমিক দর্শনার্থীদের কাছে বরাবরই অত্যন্ত প্রাধান্য পায় এই স্থানটি। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীদের আয়োজনে পতাকা উত্তোলন এবং বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর প্যারেড অনুষ্ঠান ভ্রমণপিপাসুদের অনেক বেশি আকৃষ্ট করে। এখান থেকে শীতকালে স্পষ্ট ফুটে উঠে রূপালি কাঞ্চনজঙ্ঘা। জিরো পয়েন্টের পাশেই মহানন্দা নদী ভারত বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছে। নদীর ওপারেই মেঘের দেশ দার্জিলিং। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি রয়েছে ভারত, ভুটান, নেপাল এবং চীন। বাংলাবান্ধা থেকে খুব কাছে ভারতের সামরিক বিমান ঘাঁটি বাগডোগা। শুধু এপার বাংলার নয়, ওপার বাংলার অনেক ভ্রমণ পিপাসুদের আগমন ঘটে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে। নেপাল, ভুটান, দার্জিলিং, গ্যাংটক, ডুয়ার্স ভ্রমণকারী পর্যটকগণ অনায়াসে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দেখার পাশাপাশি তেঁতুলিয়ার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ এবং পঞ্চগড়ের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ দেখতে পারেন।

পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন এবং বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর পঞ্চগড়ের তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব বনমালী ভৌমিক এর ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনায় বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ল্যান্ডমার্কটি স্থাপন করা হয়। ল্যান্ডমার্কটি উদ্বোধন করেন পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য মজহারুল হক প্রধান। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট নির্মাণ সহায়তায় অন্যান্যরা ছিলেনঃ

১ ৷ জসীম উদ্দিন আহম্মেদ কমিশনার, রংপুর বিভাগ, রংপুর।
২। মোখলেছার রহমান সরকার জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট।
৩। এহছানুল পারভেজ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পঞ্চগড়।
৪। নাইমুজ্জামান মুক্তা জনপেক্ষিত বিশেষজ্ঞ, এটুআই প্রোগ্রাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ঢাকা।
৫। লেঃ কর্ণেল মোঃ সিরাজুল হক অধিনায়ক, ২৫ ব্যাটালিয়ন, বিজিবি, পঞ্চগড়।
৬। মেজর মোঃ মাসুদ উল ইসলাম উপ-অধিনায়ক, ২৫ ব্যাটাশিয়ন, বিজিবি, পঞ্চগড়।
৭। এ কে এম আব্দুস লালাম খান নির্বাহী প্রোকৌশলী, সওজ, পঞ্চগড়।
৮। মন্মথ রঞ্জন হালদার নির্বাহী প্রোকৌশলী, এলজিইডি, পঞ্চগড়।
৯। উজির আলী নির্বাহী প্রোকৌশলী, গণপূর্ত বিভাগ, পঞ্চগড়।
১০। আমিরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার, তেঁতুলিয়া।
১১। এস এম মাজহারুল ইসলাম সহকারী কমিশনার (ভূমি), তেঁতুলিয়া।
১২। এ জেড এম রেজওয়ানুল হক ম্যানেজিং পার্টনার, হক টি এক্টেট, পার্বতীপুর, দিনাজপুর।
১৩। কে, এম খালেদ চেয়ারম্যান, গেটকো গ্রুপ, ঢাকা।
১৪। আনোয়ার সাদাত সম্রাট ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ, পঞ্চগড় সদর।
১৫। মোঃ নারবুল ইসলাম চেয়ারম্যান, বাংলাবান্ধা ইউ পি, তেঁতুলিয়া।
১৬। কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু তেঁতুলিয়া।
১৭। মোশারফ হোসেন পরিচালক, চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, পঞ্চগড়।
১৮। আব্দুর রাজ্জাক প্রাক্তন উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার (রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত), বোদা, পঞ্চগড়।
১৯। মিজানুর রহমান ম্যানেজার, তেঁতুলিয়া টি কোং লিঃ, তেঁতুলিয়া।
২০। আকতারুজ্জামান ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
২১। ক্যাপ্টেন হাসিবুল হোসেন নবী বিজিবি, পঞ্চগড়।
২২। রেজাউল করিম জাতীয় পার্টি, পঞ্চগড়।
২৩। মুক্তারুল হক মুকুল উপজেল৷ চেয়ারম্যান, পঞ্চগড়।
২৪। বেগম শাহারীন গণি দিনাজপুর।

ভারত, ভুটান, নেপাল এবং চীন-এর সাথে স্থলপথে যোগাযোগের সুবিধা থাকার কারণে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বাংলাদেশের একমাত্র বহুদেশীয় স্থলবন্দর হিসেবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মহানন্দা নদীর তীরে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী প্রায় ১০ একর জমি জুড়ে গড়ে উঠে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এর পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম।

অবস্থানঃ তেঁতুলিয়া উপজেলার ১নং বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট অবস্থিত। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট মূলত একই স্থানে। জিরো পয়েন্ট ল্যান্ডমার্কটি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের সম্মুখে রাস্তার পাশে একটি খোলা ময়দানের উপরে নির্মিত। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট দূরত্ব তেঁতুলিয়া থেকে ১৭ কিমি এবং ঢাকা থেকে ৫০৩ কিমি।

কখন যাবেনঃ সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর বিধিনিষেধ না থাকলে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট বছরের সবসময় খোলা থাকে। তবে  কাঞ্চনজঙ্ঘা, সমতল ভূমির চা বাগান ও তেঁতুলিয়া দেখতে আসা পর্যটক ও সাধারণ দর্শনার্থীগণ বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে শীতকালে বেশি আসেন।

কিভাবে যাবেনঃ বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট যেতে হলে পঞ্চগড় বাস টার্মিনাল থেকে তেঁতুলিয়াগামী বাসে বাংলাবান্ধা বাজারে নামতে হবে। বাংলাবান্ধা বাজার থেকে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় যানবাহন (রিক্সা/অটোভ্যান) রয়েছে। তবে পঞ্চগড় সদর থেকে গাড়ী, মোটরসাইকেল বা রেন্ট এ কার ব্যবহার করা সুবিধাজনক। Travel Tips | Accommodation | Tourist Spots

 


Last updated: 5 February 2024

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn