নাঈমুজ্জামান মুক্তা – Naimuzzaman Mukta

রাজনীতিবিদ নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা বর্তমানে (২০২৪) পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং তিনি  ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড় ১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত বিজয়ী প্রার্থী ছিলেন। আটোয়ারী উপজেলার সাতখামার গ্রামের বাসিন্দা নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা পঞ্চগড়ে নাঈমুজ্জামান মুক্তা নামেই অধিক পরিচিত। নাঈমুজ্জামান মুক্তা এক সময় ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বিভাগীয় উপকমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন।

নাঈমুজ্জামান মুক্তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের উত্তাল দিনে ১৯৭১ সালের ৪ অক্টোবর পঞ্চগড় জেলার তেতুঁলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। বাবা-মা তাঁর নাম রাখেন মুক্ত। শৈশব-কৈশোর থেকে তিনি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে Development Studies বিষয়ে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করে।

মেধাবী ও তুখোড় সাবেক ছাত্রনেতা নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP) পরিচালিত a2i (এক্সেস টু ইনফরমেশন) প্রকল্পের সিনিয়র কর্মকর্তা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহভাজন হিসাবে পরিচিত। নাঈমুজ্জামান মুক্তা একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক। সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা দেশের শীর্ষ শিল্প গোষ্ঠী শিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ পোস্ট-এর জয়েন্ট এডিটর হিসাবে কর্মরত ছিলেন। দেশের প্রথম বেসরকারী ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবেও নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।

নাঈমুজ্জামান মুক্তার রাজনীতি জীবন শুরু হয় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের হাত ধরে। ছাত্র রাজনীতির কালে তিনি ছাত্র ইউনিয়ন করতেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। সরাসরি আন্দোলন সংগ্রামে তাঁর অংশ নেয়ার সুযোগ হয় ১৯৯০ সালে স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলন চলাকালে। বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে এরশাদের ছবি নামিয়ে পুড়িয়ে ফেলায় নাঈমুজ্জামান মুক্তার নামে মামলা হয়। পরের বছর ১৯৯১ সালে পঞ্চগড়ে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর সমাবেশ বন্ধ করতে জেলার প্রবেশ মুখে দিনরাত গান গেয়ে, স্লোগান দিয়ে তাকে প্রতিহত করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে নাঈমুজ্জামান মুক্তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পঞ্চগড় চিনিকল মাঠে কয়েক’শ সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন নেতা-কর্মীকে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। নাঈমুজ্জামান মুক্তা ২০০৮ সালে এইচটি ইমামের নেতৃত্বে মিডিয়া সেন্টারের সাথে যুক্ত হন। এ সময় প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে আটক করা হলে তাঁর মুক্তির দাবিতে জনমত গড়ে তুলতে বিভিন্ন দুতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানদের কাছে নিয়মিতভাবে তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ করতে থাকেন জনাব মুক্তা। ২০১২ সাল থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

নাঈমুজ্জামান মুক্তা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তবে সেবার দলীয় মনোনয়ন না পেলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে তিনি পুরো সময় জুড়ে পঞ্চগড় ১ নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। পঞ্চগড়ের মানুষের পাশে থেকে মানুষের জন্য কিছু করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়ে নিজ জেলা পঞ্চগড়ে ফিরে আসেন নাঈমুজ্জামান মুক্তা। নির্বাচনী এলাকায় একের পর এক সমাবেশ করেছেন। এই সব সমাবেশে তরুনদের সম্পৃক্ত করার মতো ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি। দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপস্থিতি তাঁর সমাবেশগুলোকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলে।

পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষের স্বপ্নগুলো তাঁদের চোখ দিয়ে দেখতে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত স্বপ্ন কুড়ানোর আঙ্গিনায় শিরোনামে একটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ হাতে নেন তিনি। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে উঠান বৈঠক করে সকলের স্বপ্ন কুড়িয়ে মালা গেঁথে প্রস্তুত করেন স্বপ্নের পঞ্চগড় কেমন দেখতে চাই নামক আঞ্চলিক ইস্তেহার পঞ্চগড় শের-ই বাংলা পার্কে এটা উপস্থাপনা করা হয় ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতাকে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে লক্ষ্যে পঞ্চগড়ে আয়োজন করেন লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে নামে একটি বিশেষ ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইনে স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বঙ্গবন্ধু’র অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। নারীর ক্ষমতায়নে জননেত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য অবদানে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পঞ্চগড়ের কিশোরীদের নিয়ে মাসব্যাপী বাইসাইকেল রান কন্যারা আগে বাড়ো নামের বিশেষ কর্মসূচি আয়োজন করেন পরিচিতি। এছাড়া হাত মিলাও কর্মসূচি, শেকড়ের কাছে কান পেতে শোনা, দোয়ার দরখাস্ত, স্বপ্ন কুড়ানোর আঙ্গিনায়, তারুণ্যের প্রথম ভোট নৌকা মার্কার পক্ষে হোক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুদ্ধ জাতীয় সঙ্গীত চর্চা, মুজিববর্ষ উদযাপনসহ অসংখ্য কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে ও কাছে আছেন নাঈমুজ্জামান মুক্তা। ২০২২-২৩ সাল নাগাদ নাঈমুজ্জামান মুক্তা পঞ্চগড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থটি বিতরণ ও পাঠ এবং পরবর্তীতে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে শীর্ষক ব্যতিক্রমী কর্মসূচির আয়োজন করেন।

নাঈমুজ্জামান মুক্তার পিতা আব্দুল খালেক ভুঁইয়া এবং মাতা নুরজাহান ভুঁইয়া। বঙ্গবন্ধুর অন্ধভক্ত বাবা ছিলেন তৎকালীন মুজিবনগর সরকারের একজন কর্মচারী। জনাব মুক্তার শ্বশুর কাজী মাহবুব একজন বীর মুক্তিযোদ্বা এবং শাশুড়ী ফরিদা আকতার হীরা সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সাংসদ হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। নাঈমুজ্জামান মুক্তার স্ত্রী কাজী মৌসুমী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে অবসর শেষে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। কাজী মৌসুমী রাওয়া ক্লাবের নির্বাহী কমিটি সদস্য ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি পঞ্চগড় জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজেও দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন কাজী মৌসুমী।


তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ পোস্ট | mukta.info.bd
ছবিঃ আলোকমিতি
Last updated: 6 Aug 2024

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

নাঈমুজ্জামান ভুঁইয়া মুক্তা

  • সংসদ সদস্য
  • রাজনীতিবিদ
  • সাংবাদিক
  • স্বতন্ত্র পরিচালক, ন্যাশনাল ব্যাংক
  • সহ-সভাপতি, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগ
  • সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্র ইউনিয়ন
  • সহ-সম্পাদক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বিভাগীয় উপ-কমিটি