ছাপড়াঝাড় মসজিদ স্থাপত্যশৈলী মুঘল আমলের স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন। মসজিদটির বর্তমান নাম ছেপড়াঝাড় -পাহাড়ভাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
ছাপড়াঝাড় মসজিদ পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারীর পশ্চিমপ্রান্তে ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ছাপড়াঝাড় গ্রামের পাহাড়ভাঙ্গা নামক স্থানে অবস্থিত। মুঘল স্থাপত্যশৈলী বহনকারী ছাপড়াঝাড় মসজিদটিতে ৩টি গম্বুজ এবং ৪টি ছোট আকারের মিনার রয়েছে, মসজিদের দেয়ালের কিছু অংশে পোড়ামাটির শিল্পও দেখা যায়। গম্বুজের উপরিভাগ নকশা খচিত ও বলয় আকৃতির বেল্ট করা। মসজিদটিতে রয়েছে প্রশস্ত ইটের তৈরি প্রাঙ্গণ, এর প্রবেশ পথে রয়েছে একটি খিলান (অর্ধবৃত্তাকার পাকা গাঁথুনির প্রবেশপথ)। এই খিলানটির নকশা ও কাঠামো মির্জাপুর শাহী মসজিদের খিলানের মত দৃশ্যত একই রকম।
ছাপড়াঝাড় মসজিদ ২৫ ফুট প্রস্থ এবং ১৫ ফুট প্রস্থ। মসজিদে প্রাপ্ত ভাঙ্গা ফলক থেকে জানা যায়, ছাপড়াঝাড় মসজিদের নির্মাতা ছিলেন জনৈক শাহাদ মন্ডল। এর নির্মাণ কাল ছিলো ১০৩৩ হিজরী (১৬২৩ খ্রিস্টাব্দ)।
নকশা ও গঠন সাদৃশ্যের কারণে ধারণা করা হয়, ছাপড়াঝাড় মসজিদ এবং মির্জাপুর শাহী মসজিদ দুইটি মুঘল আমলের একই সময়কালে নির্মিত। উভয় মসজিদের স্থাপত্যরীতি একই হবার কারণে, মির্জাপুর শাহী মসজিদের প্রকৌশলী এবং নির্মাতারা ছাপড়াঝাড় মসজিদ নির্মাণ কাজে অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে অনুমান করা হয়।
বিংশ শতাব্দীর শুরুর সময়কাল পর্যন্ত মসজিদের সম্মুখে বিশাল আকারের একটি বট গাছ ছিলো। মসজিদের প্রাঙ্গনে রয়েছে হযরত শাহ সুফি পীর কেবলা মাওলানা আরিফ (রাঃ আঃ) এর মাজার শরীফ। এই মাজার শরীফ কে ঘিরে প্রতি বছরের ১৮ই চৈত্র ওরশ আয়োজন করা হয়।
সময়ের আবর্তে এই মসজিদের উচ্চতা অনেক কমে গেছে। ইতিহাসবিদগণের মতে, অত্র এলাকায় সংঘটিত ১৮৬৭ সালের ভূমিকম্পে উভয় মসজিদেরই ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং এর পরবর্তীতে ছাপড়াঝাড় মসজিদ মূল কাঠামোর মেরামত করা না হলেও ২০১২ সালে মসজিদের বাহিরের অংশ সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, যার ফলস্বরূপ ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি তাঁর ঐতিহ্যগত সৌন্দর্য হারিয়েছে।

কিভাবে যাবেনঃ
ছাপড়াঝাড় মসজিদ আটোয়ারী থেকে সড়কপথে প্রায় ৯ কিঃ মিঃ পথ। আটোয়ারী বাজার থেকে রিকশা-ভেন অথবা অটো’তে করে পৌঁছাতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট।
ছাপড়াঝাড় মসজিদের অবস্থানঃ
Last updated: 17 November 2023
তথ্যসূত্রঃ ড. নাজমুল হক | পঞ্চগড় ইতিহাস ও লোকঐতিহ্য