করতোয়া নদীর কোল ঘেঁষে বিস্তৃত এলাকায় নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ-গাছালী দিয়ে ভরা অপরূপ ছায়াঘেরা ময়নামতির চর দেবীগঞ্জ উপজেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান। করতোয়া নদীর সৌন্দর্যে ময়নামতির চর-এর সবুজ বনাঞ্চল অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। শহরের কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে, মানসিক প্রশান্তির জন্য গাছ-গাছালি ঘেরা ময়নামতি চরের মনোরোম পরিবেশের আকর্ষণে বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন ময়নামতির চরে। ময়নামতির চর পঞ্চগড় জেলার একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। সবুজের সমারোহ আর স্নিগ্ধ বাতাসের নিরিবিলি পরিবেশঘেরা এই স্থানটি সহজেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে তোলে।
দেবীগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত করতোয়া নদী বেষ্ঠিত প্রায় ৩৫ একর জমি জুরে বিস্তৃত ময়নামতির চর-এর বনাঞ্চল। এখানে বন বিভাগ কর্তৃক আমলকি, আতর, দেশি কড়াই, নিম, মেহগণি, দেবদারু, আম, জাম, কাঁঠাল, বেল সহ নানা জাতের ৩০,০০০ এর অধিক বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। সবুজ গাছ-গাছালীর মাঝে বাগানের চতুর পার্শ্বে দর্শনার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে নির্মিত কংক্রিটের রাস্তা ময়নামতির চর কে করে তুলেছে আরো মনোমুগ্ধকর। বাগানের একাধিক স্থান সিমেন্টের বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। ময়নামতি চরের পশ্চিমে করতোয়া নদী, উত্তরে চা বাগান, দক্ষিণ ও পূর্বে আবাদি জমি।
ময়নামতির চরে আসা দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ করতোয়া নদীতে রোমাঞ্চকর নৌকাভ্রমণ, চর সংলগ্ন চা বাগানে বিচরণ এবং চর থেকে একদম কাছেই ৪র্থ চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর অপূর্ব কাঠামো। পড়ন্ত বিকেলে সবুজে ঘেরা ময়নামতির চরের বনাঞ্চল হয়ে ওঠে আরও অপরূপ।
ময়নামতি চরে ২০১৩ সালের ২৫ থেকে ৩১ জানুয়ারি ১০ম জাতীয় রোভারমুট ও কমডেকা আসর অনুষ্ঠিত হয়। রোভারমুট ও কমডেকা আসরে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলার স্কুল, কলেজ এবং ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, আফগানিস্তান সহ আরোও কয়েকটি দেশের স্কাউট দল। আসর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কর্তৃপক্ষের অবহেলা, নজরদারির অভাব ও নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে ময়নামতির চর বর্তমানে (২০২৪) চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
অবস্থানঃ দেবীগঞ্জ উপজেলা সদর হতে ১ কিমি দক্ষিণে ময়নামতির চর অবস্থিত। দেবীগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তার মোর হতে ময়নামতির চরে রিক্সা ও ভ্যান যোগে যাতায়াত করা যায়।
…আরো পড়ুন পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ | Travel Tips | Accommodation
ছবিঃ মোঃ হারুন আর রশিদ
Last updated: 1 May 2024