পঞ্চগড় শহরের বুকে প্রবাহিত করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত পঞ্চগড় করতোয়া সেতু পঞ্চগড় জেলা শহরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। ১৯৮৮ সালে পঞ্চগড় জেলা শহরের প্রবেশমুখে ২৭৫ মিটার দৈর্ঘ্য করতোয়া সেতু নির্মাণ করা হয়। পঞ্চগড় শহরের কোল ঘেঁষে নির্মিত করতোয়া সেতু পঞ্চগড় জেলা শহর, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও তেতুলিয়ার সাথে সড়কপথে বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধায় স্থলবন্দর ও চা শিল্পের পণ্যবাহী সকল যানবাহন, পঞ্চগড় থেকে উত্তোলিত নুড়িপাথর ও বালু বহনকারী ভারী বাহন, পঞ্চগড়ের বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্যবাহী ট্রাকসহ সকল প্রকার যানবাহন করতোয়া সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে।
ব্রিটিশ শাসনামলে সর্বপ্রথম করতোয়া সেতু নির্মাণ করা হয়, যা ছিল মূলত একটি লোহার তৈরী সেতু। লোকমুখে শোনা যায়, ঐতিহাসিক সেই লোহার সেতুটির নাম ছিলো ইলিয়ট ব্রিজ। যে ইংরেজ প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে লোহার সেতুটি বানানো হয়েছিল, তাঁর সম্মানেই এই নামকরণ করা হয়। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অগ্রযাত্রা রুখতে করতোয়া সেতুর মাঝের অংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হয়। লোহার তৈরী করতোয়া সেতু ১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য ছিল এবং বর্তমানের করতোয়া সেতুটি তৈরি হলে দুর্বল লোহার সেতুটি ভেঙ্গে তুলে নেয়া হয়। বর্তমানের করতোয়া সেতুটি উদ্বোধন করা হয় ১৯৮৮ সালের ২৩শে জুন।
করতোয়া সেতুর এক প্রান্তে গোলচক্কর, এস বি ফিলিং স্টেশন, পঞ্চগড় পৌরসভা এবং অপর প্রান্তে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, শেরে বাংলা পার্ক, পঞ্চগড় জিরো পয়েন্ট এবং জেলা পরিষদ গেষ্ট হাউজ। পঞ্চগড়ের ধমনী ঐতিহাসিক করতোয়া সেতুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, সেতু থেকে পশ্চিম আকাশে নদীর উপরদিয়ে দৃশ্যমান প্রতিদিনের সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য।
অবস্থানঃ পঞ্চগড় সদরে, জেলা শহরের প্রবেশমুখে পঞ্চগড় করতোয়া সেতুটি অবস্থিত। …Travel Tips | Accommodation | Tourist Spots
Last updated: 5 March 2024