আশ্রয়ণ সেতু – Asrayan Bridge

আশ্রয়ণ সেতু
ধাক্কামারা, পঞ্চগড় সদর, পঞ্চগড়।

ম্যাপঃ Google map

পঞ্চগড় সদর উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের নিজস্ব অর্থায়নে তিন দিকে নদীবেষ্টিত রাজারপাট ডাঙ্গার আশ্রয়ণ প্রকল্পের মানুষদের পারাপারের জন্য চাওয়াই নদীর উপরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু। সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে আশ্রয়ণ সেতু। সেতুটি নির্মাণের ফলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কমেছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের, বদলে গেছে তাঁদের জীবনযাত্রা।

আশ্রয়ণ সেতু

দেখতে অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো রাজারপাঠ ডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পটি পঞ্চগড় জেলা শহর থেকে ৮ কিমি দূরে ধাক্কামারা ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে সরকার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য স্থায়ী ঠিকানা গড়ার লক্ষ্যে সদর উপজেলার আমতলা এলাকায় চাওয়াই নদীর ওপারে রাজারপাট ডাঙ্গা এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে ২০০১ সালে ভূমিহীন ৩০ মুক্তিযোদ্ধা এবং ১২০ হতদরিদ্রকে ৫.৫০ শতাংশ করে খাসজমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে গড়ে ওঠে রাজারপাঠ ডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প। একেকটি পরিবারের জন্য আড়াই শতাংশ জমির ওপর সরকারি খরচে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পটির পশ্চিম ও দক্ষিণে করতোয়া এবং পূর্বে চাওয়াই নদী। উত্তর প্রান্তে একটি সরু আলের মতো ব্যক্তিমালিকানা জমি থাকলেও বর্ষায় তা ভেঙে যায়। তিন দিকে বয়ে যাওয়া নদীতে কোনো সেতু না থাকায় শুষ্ক মৌসুমে হাঁটুপানি ভেঙে লোকালয়ে পৌঁছানো যায় কিন্তুবর্ষায় নদী পার হওয়ার কোনো উপায় থাকে না। বর্ষাকালে নদীতে ভরা পানি থাকায় অস্বাভাবিক দুর্ভোগে পড়তে হতো আশ্রয়ণ প্রকল্প বাসিন্দাদের। সে সময় অনেকটা পানিবন্দি জীবনযাপন করতে হয় তাদের। ব্যাহত হতো দৈনন্দিন যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা তথা সামগ্রিক জীবনযাত্রা। নৌকা দিয়ে, কখনো সাতার কেটে কিংবা বুক পানি পেরিয়ে নদী পার হয়ে শহরে যেতো হতো। এতে হাটুগলা নদী পার হতে সঙ্গে নিতে হতো আলাদা কাপড়ও। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে নদীপাড়ের মানুষগুলো চাওয়া ছিল এই সেতু।

আশ্রয়ণ সেতুর নির্মাণকাল ২০২২ সালের অক্টোবর হতে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত। আশ্রয়ণ সেতু নির্মাণে কংক্রিটের পিলার যোগান দিয়েছে কাজী এন্ড কাজী টি এবং কাঠের জন্য অর্থ সহায়তা করেছে মর্গান টি। পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড সেতুর দু’প্রান্ত মজবুতকরণের কাজটি করে সেতুকে টেকসই করেছে। অবশিষ্ট সকল ব্যয় জেলা প্রশাসন পঞ্চগড় ও উপজেলা পরিষদ এবং সদর উপজেলা থেকে সম্মিলিতভাবে বরাদ্দকৃত ৩৫ লাখ টাকা থেকে যোগান দেওয়া হয়েছে। রাজারপাঠ ডাঙ্গা ভূ-স্বর্গ দ্বীপের সাথে যোগাযোগের জন্য অনিন্দ্য সুন্দর কাঠের সেতু নির্মাণে পিছনের কারিগররা ছিলেন ইউএনও মোঃ মাসুদুল হক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, এডিসি পঞ্চগড় অথৈ আদিত্য এবং জেলা প্রশাসক মোঃ জহুরুল ইসলাম।

অবস্থানঃ পঞ্চগড় জেলা শহর থেকে ৮ কিমি দূরে ধাক্কামারা ইউনিয়নে চাওয়াই নদীর উপরে আশ্রয়ণ সেতুটি অবস্থিত।

আশ্রয়ণ সেতু দিয়ে কোনো ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে না। কাঁঠের নান্দনিক আশ্রয়ণ সেতুর পাশেই শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ চলছে (২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী)।

…আরো পড়ুন পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ


তথ্যসূত্রঃ অথৈ আদিত্য
ছবিঃ আবু সায়েম
Last updated: 11 May 2024

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn